কে জানে রে কালী কেমন? গেয়েছিলেন সাধক কবি রামপ্রসাদ। সত্যিই কালীতত্ত্ব অনন্ত। তবুও বামনেরও চাঁদ ধরতে সাধ হয়। বাঙালির ঘর, বাঙালির ভূখণ্ড, বাঙালির সংস্কৃতি মাতৃনামের সাথে চিরকাল অভিন্ন হয়ে আছে বলেই বোধহয় মনে ইচ্ছা হয় কালীসাধনার ইতিবৃত্ত জানতে। সেই ইতিহাস শুধুমাত্র বাংলার ভৌগলিক সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং উপমহাদেশের মাতৃসাধনার আদিতম ধারার সাথে সংযুক্ত। তাই মেহেরগড় হরপ্পা থেকে বৃহৎ বঙ্গের প্রাচীন সাম্রাজ্য; রাত্রিসূক্ত থেকে বজ্রযানী মণ্ডল; সর্বত্রই সেই কালীতত্ত্বের ছায়াসম্পাত ঘটেছে। এবং সেই ধারা আজও বহমান। গুপ্তযুগের কালিদাস থেকে সদুক্তিকর্ণামৃতের নাম না জানা কবি, সকলেই কালীর মহিমা বর্ণনায় যেভাবে পঞ্চমুখ হয়েছেন; সেই একই উচ্ছ্বাস ফুটে উঠেছে রামপ্রসাদ কমলাকান্তের শাক্ত পদাবলীর আখরে। সাধ্যমত সেই আদিপর্বের একটি রূপরেখা নির্মাণ করার চেষ্টা করেছি “বাঙালির কালীসাধনা: আদিপর্ব” এই বইটিতে। কোন্ পথে বাঙালির মননে কালীতত্ত্ব সেই আদি সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে; বাঙালির কালীসাধনা উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে কোন্ বৈশিষ্ট্যের জন্য স্বতন্ত্র আসনে অধিষ্ঠিত; সেই নিয়েই সাধ্যমত আলোচনা করেছি। আর দেখার চেষ্টা করেছি সতীপীঠ স্থাপনের রহস্যময় ইতিহাসকে।