ধর্ম ও নেশা
পৃথিবীর সব দেশের সব ধর্মের লোকেরাই সুদীর্ঘকাল যাবৎ নেশাদ্রব্য ব্যবহার করে চলেছেন। কোথাও কোথাও নিষিদ্ধ হলেও প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে এই অভ্যাস প্রচলিত রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা ও সম্মতি রয়েছে। ওষধি হিসাবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে এগুলির ব্যবীর স্বীকৃত।
হিন্দুধর্ম
মহাকাব্য, বিভিন্ন পুরাণ এবং প্রাচীন গ্রন্থগুলিতে দেবদেবীদের মদ্যপান, সুরার প্রসঙ্গ, নিষেধাজ্ঞা এবং সম্মতি মিলেমিশে রয়েছে হিন্দু ধর্মে। ঋকবেদে বলা হয়েছে তোমার নেশাকারী বন্ধু যদি খুব পণ্ডিত বা ধনীও হয়, তবুও সে বজ্রপাততুল্য এবং পরিত্যাজ্য নকী রেবন্তঃ সখ্যায়া বিন্দসে পীয়ন্তি তে সুরস্বঃ। / য়দা কুয়োসি নদানু সমূহস্যাদিত পিতেব হয়সে।।’
মনুসংহিতায় মদ-কে অন্নের মল এবং পাপ স্বরূপ বলা হয়েছে। সেজন্য ব্রাহ্মাণ, ক্ষত্রিয় এবং সকলের জন্য অবশ্য বর্জনীয়। ‘সুরা বৈ মলমন্নানাং পা চ/ মলমুচ্যতে তস্মন ব্রাহ্মাণ / রাজন্যোবৈশ্যশ্চ ন সুরাং পিবেত।’
মহর্ষি যস্ক তাঁর নিরুক্ত সংহিতায় বেদে বর্ণিত সাতটি মহাপাপের উল্লেখ করেছেন- চুরি, অশ্লীলতা, ব্যাভিচার, হত্যা, ভ্রূণ নিধন, অগ্নিসংযোগ এবং নেশা বা মদ্যপান।
সংহিতা রচনাকারীরা মহিলাদের মদ্যপানের বিরোধিতা করেছিলেন। যাজ্ঞবল্কা বলেছেন কোনও ব্রাহ্মহ্মণের স্ত্রী মদ্যপায়ী হলে তিনি সেই স্ত্রী জীবিত থাকাকালীনই পুনরায় দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারেন। পতঞ্জলির রচনা থেকে জানা যায় কোনও ব্রাহ্মণের স্ত্রী মদ্যপায়ী হলে দেবতারা তাকে পতিলোকে যাওয়ার অধিকার দেন না।
Reviews
There are no reviews yet.