উনিশ শতকের প্রথমার্ধে মার্কিন দেশে ভারতীয় মশলা, রেশমের বিরাট চাহিদা ছিল। কিন্তু সে দেশ থেকে আমদানি করার মতো জিনিস তেমন ছিল না। ফলে জলে ভারসাম্য রাখার জন্য খালি জাহাজে বালি ভর্তি করে নিয়ে আসা হত। স্পষ্টতই লোকসান। ১৮৩৩ সালে প্রথম ফ্রেডরিক টিউডর আমেরিকা থেকে ‘টুস্কানি’ নামের জাহাজে বরফ ভর্তি করে পাড়ি দিলেন কলকাতার উদ্দেশে। উনিশ শতকের প্রথম দিকে আন্তর্জাতিক বরফ-বাণিজ্যের পথিকৃৎ ছিলেন ‘আইস কিং’ ফ্রেডরিক টিউডর। বস্টনে তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ‘টিউডর আইস কোম্পানি’। জাহাজ কলকাতা বন্দরে এলে দেখা গেল যে, এক-তৃতীয়াংশ বরফ গলে গিয়েও যা রয়েছে, তা বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা করা যায়। ব্যস! মার্কিন দেশে ঠান্ডায় নদী বা জলাশয়ে প্রাকৃতিক ভাবে জমা বরফের বাণিজ্যিক মূল্য সম্পর্কে দুনিয়ার চোখ খুলে গেল।
তখন ভারতের রাজধানী কোম্পানির শাসনাধীন। দেশে প্রচুর ব্রিটিশ সাহেব-মেম। এখানকার গরম আর নানা রোগের প্রকোপে তাঁদের অবস্থা কাহিল। তখন এক টুকরো বরফ তাদের শুধু যে দেশের কথা মনে করিয়ে দিত, তা-ই নয়, দিনের শেষে খাদ্য ও পানীয়ও করে তুলত উপাদেয়। অনেক সময় জ্বর কমাতেও কাজে লাগে বরফ। ১৮৩০-৪০ নাগাদ আর্থিক মূল্য ও ওজনের নিরিখে, আমেরিকা থেকে ভারতে আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছিল মার্কিন বরফ।
Reviews
There are no reviews yet.