Jounotar Shobdokosh By Haripada Bhowmik – যৌনতার শব্দকোষ

Brand :
100.00 Original price was: ₹100.00.99.00Current price is: ₹99.00.

পটকথা

মনুষ্য সমাজ গঠনে নারী-পুরুষ সৃষ্টির কথায় মনু তাঁর সংহিতায় (১৩২) লিখেছেন—’স্রষ্টা নিজের দেহ দ্বিধা বিভক্ত করে অর্থভাগে পুরুষ হলেন, অপর অর্ধে নারী হলেন। প্রথম দিকে সন্তান জন্ম বিষয়ে – পুরুষ কার কী ভূমিকা তা মানুষ বুঝে উঠতে পারেনি। মানুষ গোষ্ঠীবদ্ধ হল। গোষ্ঠী বা কৌম ভেঙে যখন পরিবারের সূচনা হয় তখন নারীর উপর পুরুষের স্বত্বাধিকার সমাজ মেনে নেয়।

একটা সময় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র এই বর্ণে বিভক্ত করা হয়। কর্মানুসারে। ‘ব্রাহ্মণদের জন্য অধ্যাপনা, অধ্যয়ন, যজন যাজন, দান ও প্রতিগ্রহ’ এবং ‘ক্ষত্রিয়ের কর্ম লোকরক্ষা, দান, যজ্ঞ, অধ্যয়ন’ ও “বৈশ্যের কর্ম পশুপালন, দান, যজ্ঞ, অধ্যয়ন, সুদে অর্থ বিনিয়োগ ও কৃষিকর্ম বলা হয়েছে। শূদ্রের কর্মের কথা বলা হয়েছে— তা হল এই সকল বর্ণের অসুয়াহীন সেবা করা’ (মনুসংহিতা ১/৮৮/১১)।

সমাজবন্ধনকে দৃঢ় রাখতে সামাজিক নিয়মে বলে দেওয়া হয়েছিল। “কোনো বর্ণের পুরুষ অন্য বর্ণের স্ত্রীকে বা এক বর্ণের স্ত্রী অন্য বর্ণের পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না।’ কিন্তু কাম এত প্রবল যে তা আইন করে রক্ষা করা যায়নি। মনু তাঁর সংহিতায় (২/২১৫) জানিয়ে রেখেছেন, ‘মা, বোন বা মেয়ের সঙ্গে শূন্য গৃহাদিতে পুরুষ থাকবে না। শক্তিশালী ইন্দ্রিয়সমূহ বিদ্বান লোককেও বশীভূত করে।’

এই সূত্রে মনে করা যেতে পারে ঋগ্বেদে (১০/৬১/৫, ৭) নাভানেদিষ্ট সূক্তের পিতা-কন্যার অবৈধ সম্পর্ক। ঋগ্বেদে (১০/১০) যম-যমী সংবাদ সূক্তের বিষয় ভাই-বোনের মধ্যে সম্পর্ক। পুরুষের নারীর খোলাখুলি যেমন ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে (ঋগ্বেদ ৭/৮০/২), তেমনি সূর্য ঊষার উপপত্তি ‘জারোন’ বারে বারে ব্যবহৃত অংশ থেকে প্রণয়ের চিত্র বহুবার পাওয়া গেছে। ঋগ্বেদে (৭/৫৫/৫-৮) নারী হরণের উল্লেখ রয়েছে, জনৈক পুরুষ প্রেমিকাকে সময় প্রার্থনা করে সমস্ত পরিবার ঘুমে ঘুমিয়ে পড়ে। কুকুরগুলো পর্যন্ত ঘুমিয়ে যাতে সে নির্বিঘ্নে প্রেমিকাকে নিয়ে পালাতে পারে।

বৈদিক পুরুষের অধিকার ছিল একাধিক পত্নী এবং অসংখ্য উপপত্নী রাখা এবং গণিকার কাছে যাবার, স্ত্রীর উপপত্তি রাখার অধিকার ছিল না। উপপতিকে ধ্বংস করার জন্য উপাচার ক্রিয়ার বিধান দেওয়া বৃহদারণ্যক উপনিষদে (৪/৪/১২)। সময় নারীকে রাখা যেত, কেনা যেত, করা যেত, হলেও তখন যৌতুক হিসেবে নারীকে দেওয়া আবার উপহার হিসেবে যেত। উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণদের সবরকম বিধবাবিবাহ ও বহুবিবাহ করার যে অধিকার পেয়েছিল তা পরে হারিয়েছে। আর্যেরা যখন কৃষিজীবী হয়ে পড়ে, তখন জীবন সম্বন্ধে তাদের একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সৃষ্টি হয়। তাঁরা বললেন নারী হল ক্ষেত্র, আর

পুরুষ তার মধ্যে বীজ বপন করে। মনু যখন সংহিতা রচনা করেন

তখন তিনিও সেই কথাটিই বলেন এভাবে— ‘নারী ক্ষেত্রস্বরূপ, পুরুষ

বীজস্বরূপ। ক্ষেত্র ও বীজের মিলনে সকল দেহীর উৎপত্তি হয়’ (৯/৩৩)। নারীকে ক্ষেত্ররূপে বর্ণনা করে একই সঙ্গে ব্যভিচারের তথ্যকে জুড়ে দেন এভাবে— ‘এক বীজ যখন উপ্ত করা হয় তখন তাতে অন্য শস্য জন্মে না। যার বীজ উপ্ত হয়, তাই জন্মে’ (৯/৪০)। সুতরাং ‘প্রাজ্ঞ, শিক্ষিত, জ্ঞানবিজ্ঞানজ্ঞ, দীর্ঘায়ুকামী ব্যক্তি কর্তৃক পরস্ত্রীতে বীজ কখনও উপ্ত হওয়া উচিত নয়’ (৯/৪১)। ‘যারা ক্ষেত্রস্বামী নয়, বীজের মালিক, তারা পরের ক্ষেত্রে বীজবপন করলে উৎপন্ন শস্যের মালিক হয় না’ (৯/৪৯)। যেমন অন্যের গাভীতে একশো বাছুর উৎপাদন করলেও সেই বাছুরগুলি গাভীর মালিকেরই হয়। বৃষ স্বামীর নয়। বৃষের যে তা বৃষ স্বামীর পক্ষে নিষ্ফল’ (৯/৫০); ‘তেমনি স্ত্রীর স্বামী-ভিন্ন ব্যক্তি পরস্ত্রীতে বীজবপন করলে যার বীজ সে ফল লাভ করে না’ (৯/৫১); ‘জলের ঢেউ ও বায়ু দ্বারা চালিত বীজ যার ক্ষেত্রে অঙ্কুরিত হবে, সেই বীজ ক্ষেত্রস্বামীরই হবে, বপনকারী ফললাভ করে না’ (১/৫৪)।

ক্ষেত্র-নারী, ক্ষেত্রের ফসল অর্থাৎ অবৈধ সন্তানের মালিকানা ক্ষেত্রস্বামী হিসেবে নারীর। তাই ব্যভিচারের ক্ষেত্রবীজের ফসল দিয়েই পৃথিবীর আদিমতম নতুন সংসার তৈরি হয়ে ছিল—নাম বেশ্যালয়।

ঋগ্বেদ থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত যৌনতা ব্যভিচার নিয়ে তৈরি হয়েছে নানান শব্দ, সম্ভবত সেই সংখ্যা আজ পর্যন্ত একত্রে প্রকাশিত হয়নি, হয়তো বা সেভাবে উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। আমরা শুধুমাত্র বৈদিক-যৌনতা বিষয়ের (প্রাচীন সাহিত্যে যৌনাচার বিষয়ক কিছু শব্দ, বর্তমান সময়ের আনোনদোবাজারের অর্থাৎ যেখানে মানুষ আনন্দ করতে আসে, সেই নিষিদ্ধপল্লির কিছু শব্দ এবং সংসার জীবনের যৌনতাবিষয়ক শব্দ নিয়ে তৈরি এই শব্দকোষটি।

Author: Haripada Bhowmik

Book – যৌনতার শব্দকোষ

Author – হরিপদ ভৌমিক

Publication – বাংলার মুখ

Weight – 0.3kg

Weight 0.3 kg
Publishers

Banglar Mukh

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “Jounotar Shobdokosh By Haripada Bhowmik – যৌনতার শব্দকোষ”

Your email address will not be published. Required fields are marked *