বাংলা সাহিত্যের এক অতি প্রিয় চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সী। ধারালো নাক, লম্বা চেহারা, নাতিস্থূল অবয়ব। অসামান্য পর্যবেক্ষণ-ক্ষমতা, অনবদ্য বিশ্লেষণী দক্ষতা। ‘শুধু বুদ্ধি দিয়েই যাবতীয় জটিল রহস্যের জট ছাড়ান এই সত্যান্বেষী। তবু কী রোমাঞ্চকর একেকটি ব্যোমকেশ-কাহিনী।আসলে ব্যোমকেশের গল্প-উপন্যাস নিছক গোয়েন্দা কাহিনী নয়। বরং সাহিত্যের ভোজে যা ছিল অপাঙ্ক্তেয়, সেই গোয়েন্দা-কাহিনীকে ব্যোমকেশ-কাহিনীর মধ্য দিয়ে চিরায়ত সাহিত্যের স্তরে উত্তীর্ণ করেছিলেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। জীবনকে এড়িয়ে ব্যোমকেশ-কাহিনীর সৃষ্টি করেননি তিনি। চেনা জীবনের মধ্যেই ফুটিয়ে তুলেছেন অচেনা চমক।এহেন ব্যোমকেশ-কাহিনীই এবার এক খণ্ডের দুই মলাটের মধ্যে। ব্যোমকেশের প্রতিটি গল্প-উপন্যাস এই অখণ্ড সংগ্রহে সাজানো হয়েছে কালানুক্রমিক বিন্যাসে। ব্যোমকেশ-জীবনের এক ধারাবাহিক চলচ্ছবি এই গ্রন্থ।
Byomkesh Samagra/Sharadindu Bandyopadhyay – ব্যোমকেশ সমগ্র
সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বক্সীর সহিত আমার প্রথম পরিচয় হইয়াছিল সন তেরশ’ একত্রিশ সালে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলি শেষ করিয়া সবেমাত্র বাহির হইয়াছি। পয়সার বিশেষ টানাটানি ছিল না, পিতৃদেব ব্যাঙ্কে যে টাকা রাখিয়া গিয়াছিলেন, তাহার সুদে আমার একক জীবনের খরচা কলিকাতার মেসে থাকিয়া বেশ ভদ্রভাবেই চলিয়া যাইত। তাই স্থির করিয়াছিলাম, কৌমার্য রত অবলম্বন করিয়া সাহিত্যচর্চায় জীবন অতিবাহিত করিব। প্রথম যৌবনের উদ্দীপনায় মনে হইয়াছিল, একান্তভাবে বাগ্দেবীর আরাধনা করিয়া বঙ্গ-সাহিত্যে অচিরাৎ যুগান্তর আনিয়া ফেলিব। এই সময়টাতে বাঙালীর সন্তান অনেক ভাল স্বপ্ন দেখে, যদিও সে-স্বপ্ন ভাঙিতেও বেশি বিলম্ব হয় না।
কিন্তু ও কথা যাক। ব্যোমকেশের সহিত কি করিয়া পরিচয় হইল এখন তাহাই বলি।
যাঁহারা কলিকাতা শহরের সহিত ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত, তাঁহাদের মধ্যেও অনেকে হয়তো জানেন না যে এই শহরের কেন্দ্রস্থলে এমন একটি পল্লী আছে, যাহার এক দিকে দুঃস্থ ভাটিয়া-মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের বাস, অন্য দিকে খোলার বস্তি এবং তৃতীয় দিকে তির্যকচক্ষু পীতবর্ণ চীনাদের উপনিবেশ।
| Weight | 1.2 kg |
|---|---|
| Publishers | Ananda |





